বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫
 দৈনিক বাংলাদেশ

ধর্মীয় পরিচয় গোপন করে ভয়ংকর প্রতারণা: রেশমি আক্তার সেলিকে দ্বিতীয় বিয়ে করলেন প্রদীপ বড়ুয়া


আব্দুল্লাহ আল ফরহাদ
আব্দুল্লাহ আল ফরহাদ
প্রকাশ : ১৩ মে ২০২৫, ০৫:৩৯ এএম | প্রিন্ট সংস্করণ |

 ধর্মীয় পরিচয় গোপন করে ভয়ংকর প্রতারণা: রেশমি আক্তার সেলিকে দ্বিতীয় বিয়ে করলেন প্রদীপ বড়ুয়া
রেশমি আক্তার সেলিকে দ্বিতীয় বিয়ে করলেন প্রদীপ বড়ুয়া।

* দ্বিতীয় স্ত্রীর সামনে নামাজ-রোজা রাখার অভিনয় করেন, আবার প্রথম স্ত্রী অঞ্জনার সামনে পূজা করেন
* এক স্ত্রীর খবর অন্য স্ত্রী জানেনা
* এলাকায় সমালোচনার ঝড়

ধর্মীয় পরিচয় গোপন রেখে এক মুসলিম তরুণীকে বিয়ে করেছেন প্রদীপ বড়ুয়া (৩৫) নামের এক যুবক। এমনকি তার অঞ্জনা (৩২) নামের একজন স্ত্রী আছে। সে ঘরে তাদের দুটি সন্তানও রয়েছে। এখন প্রদীপ বড়ুয়া প্রথম স্ত্রীর সামনে পূজা করেন, আবার দ্বিতীয় স্ত্রীর সামনে নামাজ-রোজা রাখার অভিনয় করেন।

ঘটনাটি ঘটেছে কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়নের মিঠাছড়ি গ্রামে।
প্রদীপ বড়ুয়া নামের ঐ যুবকের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায়। তার বাবার নাম মৃত রতন বড়ুয়া।

এ তথ্য ফাঁস হওয়ার পর ঐ এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি সামাজিক এবং ধর্মীয়ভাবে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। স্থানীয়দের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়াও সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বাসিন্দা প্রদীপ বড়ুয়া একজন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। দুই বছর আগে তার এক মুসলিম বন্ধুর সাথে উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়নের মিঠাছাড়ি গ্রামে বেড়াতে যান। সেখানে ঐ এলাকার জয়নালেন মেয়ে রেশমি আক্তার সেলির (২০) সাথে তার পরিচয় হয়। ওই সুন্দরী তরুণীকে প্রেমের পাদে ফেলতে নিজেকে মুসলিম পরিচয় দেয় প্রদীপ বড়ুয়া। এমনকি বিয়ের কথাও গোপন রাখেন।

নিজের প্রকৃত পরিচয় গোপন রেখে, মুসলিম পরিচয়ে রেশমি আক্তার সেলির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে থাকেন। তার বেশ-ভুষা, চালচলন, আচরণ এমনই ছিল যে, কেউই সন্দেহ করতে পারেননি সে মুসলিম নন। নিজেকে মুসলিম পরিচয়ে তুলে ধরার কৌশলেই তিনি সেলির মন জয় করেন। তাকে বশ করে নিজের আয়ত্তে নেন। এক পর্যায়ে দু’জনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং তারা বিবাহ সম্পাদন করেন।

নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, বিয়ের পর থেকেই মুসলিম তরুণী সেলিকে চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে একটি ভাড়া বাসায় রেখেছেন। তার প্রথম স্ত্রী অঞ্জনাও দুই সন্তান নিয়ে ওই এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। বিয়ের পর থেকে দুই বছর পর্যন্ত এক স্ত্রীর খবর অন্য স্ত্রী জানেনা। প্রদীপ বড়ুয়া প্রথম স্ত্রীর সামনে গেলে পূজা করেন, আবার দ্বিতীয় স্ত্রীর সামনে নামাজ-রোজা রাখার অভিনয় করেন। রমজান মাসে তার মুসলিম স্ত্রী সেলির সাথে সেহেরী খেয়ে রোজার নিয়ত করে, আবার সকালে তার হিন্দু স্ত্রী ও সন্তানদের সাথে সকালের নাস্তা করেন। অভিনয়ের মধ্যে দিয়ে এভাবেই চলছে তার জীবন।

নির্ভরযোগ্য সূত্র আরও জানায়, মুসলিমদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও আনন্দময় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহার সময় তার মুসলিম শ্বশুর বাড়িতে কুরবানি করাতে যান। আবার শ্বশুর বাড়ির লোকদের সাথে ঈদের নামাজও পড়তে যান।

এদিকে প্রদীপ বড়ুয়ার প্রকৃত পরিচয় জানাজানি হওয়ার পর স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক কানাঘুষা, উত্তেজনা ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। অনেকেই এমন প্রতারণামূলক ঘটনার নিন্দা জানিয়ে এবিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এবিষয়ে জানতে চাইলে, প্রদীপ বড়ুয়া প্রথম স্ত্রী ও দুই সন্তানের কথা স্বীকার করেন। কিন্তু ‘আপনি বড়ুয়া হয়ে কিভাবে একজন মুসলিম তরুণীকে বিয়ে করলেন’? এমন প্রশ্ন শুনে তিনি কল কেটে দেন। পরবর্তীতে ২/৩ বার কল দিলেও রিসিভ করেননি তিনি।

পরিচয় গোপন রেখে বিয়ে করা একটি জগন্যতম অপরাধ। এটি ধর্ষণের সমতুল্য অপরাধ। আইনে এর কঠিন শাস্তির বিধান রয়েছে। সুতরাং এমন অপরাধীকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শান্তি দেওয়া জরুরী বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।

আপনার মতামত লিখুন

 দৈনিক বাংলাদেশ

প্রকাশের তারিখ : ১৫ অক্টোবর ২০২৫


ধর্মীয় পরিচয় গোপন করে ভয়ংকর প্রতারণা: রেশমি আক্তার সেলিকে দ্বিতীয় বিয়ে করলেন প্রদীপ বড়ুয়া

প্রকাশের তারিখ : ১৩ মে ২০২৫

featured Image

* দ্বিতীয় স্ত্রীর সামনে নামাজ-রোজা রাখার অভিনয় করেন, আবার প্রথম স্ত্রী অঞ্জনার সামনে পূজা করেন
* এক স্ত্রীর খবর অন্য স্ত্রী জানেনা
* এলাকায় সমালোচনার ঝড়

ধর্মীয় পরিচয় গোপন রেখে এক মুসলিম তরুণীকে বিয়ে করেছেন প্রদীপ বড়ুয়া (৩৫) নামের এক যুবক। এমনকি তার অঞ্জনা (৩২) নামের একজন স্ত্রী আছে। সে ঘরে তাদের দুটি সন্তানও রয়েছে। এখন প্রদীপ বড়ুয়া প্রথম স্ত্রীর সামনে পূজা করেন, আবার দ্বিতীয় স্ত্রীর সামনে নামাজ-রোজা রাখার অভিনয় করেন।

ঘটনাটি ঘটেছে কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়নের মিঠাছড়ি গ্রামে।
প্রদীপ বড়ুয়া নামের ঐ যুবকের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায়। তার বাবার নাম মৃত রতন বড়ুয়া।

এ তথ্য ফাঁস হওয়ার পর ঐ এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি সামাজিক এবং ধর্মীয়ভাবে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। স্থানীয়দের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়াও সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বাসিন্দা প্রদীপ বড়ুয়া একজন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। দুই বছর আগে তার এক মুসলিম বন্ধুর সাথে উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়নের মিঠাছাড়ি গ্রামে বেড়াতে যান। সেখানে ঐ এলাকার জয়নালেন মেয়ে রেশমি আক্তার সেলির (২০) সাথে তার পরিচয় হয়। ওই সুন্দরী তরুণীকে প্রেমের পাদে ফেলতে নিজেকে মুসলিম পরিচয় দেয় প্রদীপ বড়ুয়া। এমনকি বিয়ের কথাও গোপন রাখেন।

নিজের প্রকৃত পরিচয় গোপন রেখে, মুসলিম পরিচয়ে রেশমি আক্তার সেলির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে থাকেন। তার বেশ-ভুষা, চালচলন, আচরণ এমনই ছিল যে, কেউই সন্দেহ করতে পারেননি সে মুসলিম নন। নিজেকে মুসলিম পরিচয়ে তুলে ধরার কৌশলেই তিনি সেলির মন জয় করেন। তাকে বশ করে নিজের আয়ত্তে নেন। এক পর্যায়ে দু’জনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং তারা বিবাহ সম্পাদন করেন।

নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, বিয়ের পর থেকেই মুসলিম তরুণী সেলিকে চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে একটি ভাড়া বাসায় রেখেছেন। তার প্রথম স্ত্রী অঞ্জনাও দুই সন্তান নিয়ে ওই এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। বিয়ের পর থেকে দুই বছর পর্যন্ত এক স্ত্রীর খবর অন্য স্ত্রী জানেনা। প্রদীপ বড়ুয়া প্রথম স্ত্রীর সামনে গেলে পূজা করেন, আবার দ্বিতীয় স্ত্রীর সামনে নামাজ-রোজা রাখার অভিনয় করেন। রমজান মাসে তার মুসলিম স্ত্রী সেলির সাথে সেহেরী খেয়ে রোজার নিয়ত করে, আবার সকালে তার হিন্দু স্ত্রী ও সন্তানদের সাথে সকালের নাস্তা করেন। অভিনয়ের মধ্যে দিয়ে এভাবেই চলছে তার জীবন।

নির্ভরযোগ্য সূত্র আরও জানায়, মুসলিমদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও আনন্দময় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহার সময় তার মুসলিম শ্বশুর বাড়িতে কুরবানি করাতে যান। আবার শ্বশুর বাড়ির লোকদের সাথে ঈদের নামাজও পড়তে যান।

এদিকে প্রদীপ বড়ুয়ার প্রকৃত পরিচয় জানাজানি হওয়ার পর স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক কানাঘুষা, উত্তেজনা ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। অনেকেই এমন প্রতারণামূলক ঘটনার নিন্দা জানিয়ে এবিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এবিষয়ে জানতে চাইলে, প্রদীপ বড়ুয়া প্রথম স্ত্রী ও দুই সন্তানের কথা স্বীকার করেন। কিন্তু ‘আপনি বড়ুয়া হয়ে কিভাবে একজন মুসলিম তরুণীকে বিয়ে করলেন’? এমন প্রশ্ন শুনে তিনি কল কেটে দেন। পরবর্তীতে ২/৩ বার কল দিলেও রিসিভ করেননি তিনি।

পরিচয় গোপন রেখে বিয়ে করা একটি জগন্যতম অপরাধ। এটি ধর্ষণের সমতুল্য অপরাধ। আইনে এর কঠিন শাস্তির বিধান রয়েছে। সুতরাং এমন অপরাধীকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শান্তি দেওয়া জরুরী বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।

 দৈনিক বাংলাদেশ

সম্পাদক ও প্রকাশক : আব্দু শুক্কুর নির্বাহী সম্পাদক: রকসী সিকদার পরিচালনা সম্পাদক : ইকবাল চৌধুরী বার্তা সম্পাদক : আব্দুল্লাহ আল ফরহাদ
কপিরাইট © ২০২৫ দৈনিক বাংলাদেশ । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত